সোমবার, অক্টোবর 7, 2024
Google search engine
হোমআইন আদালতমোহনগঞ্জে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামীসহ গ্রেপ্তার ৩

মোহনগঞ্জে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামীসহ গ্রেপ্তার ৩


রিপন বনিক, মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি:

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ফাতেমা সুলতানা ওরফে রেহেনা (২১) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামী সাহিত্য মুরসালিন (৪০) সহ পরিবারের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে নিহত ওই গৃহবধূর পিতা তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে মেয়ের স্বামী সাহিত্য মুরসালিনসহ তার পরিবারের ৫ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে মোহনগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর পরপরই পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন- নিহত গৃহবধূর স্বামী অ্যাডভোকেট সাহিত্য মুরসালিন (৪০), তার বড় ভাই হারুন অর রশিদ (৪৩) ও হারুন অর রশিদের স্ত্রী নাসিমা আক্তার (৩০)।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মোহনগঞ্জ পৌরশহরের কাজিয়াটি মাইজপাড়া গ্রামে স্বামীর বসতঘরের একটি কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাচানো ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূ ফাতেমা সুলতানা ওরফে রেহেনার মরদেহ উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্বামীর পরিবারের লোকজন।
এদিকে নিহত ওই গৃহবধূকে স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, বলে দাবি পিতা তোফাজ্জল হোসেনের।
পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোহনগঞ্জ পৌরশহরের কাজিয়াটি মাইজপাড়া গ্রামের মৃত ওয়ালী আহম্মেদের ছেলে সাহিত্য মোরসালিনের সঙ্গে গত প্রায় ৮ মাস আগে ফেনী জেলার পরশুরাম পৌরশহরের কোলাপাড়া এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে ফাতেমা সুলতানা ওরফে রেহেনার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বেশ কয়েক মাস তাদের দাম্পত্য জীবন ভালোই চলছিল। এর কিছুদিন পর গৃহবধূ ফাতেমা জানতে পারেন তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী রয়েছে। স্বামী এ বিষয়টি তার কাছে গোপন রেখে প্রতারণার করে সে তাকে বিয়ে করেছে। এ নিয়ে তখন থেকেই তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে গৃহবধূ ফাতেমার ঝগড়াঝাটি চলে আসছিল। এ নিয়ে প্রায়ই গৃহবধূ ফাতেমাকে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন মারধর করত বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগে আরো উল্লেখ এরই জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই গৃহবধূর স্বামী সাহিত্য মুরসালিন তার মা রেজিয়া খাতুন, বড় ভাই হারুন অর রশিদ, ফারুক আহম্মেদ ও বড় ভাবী নাসিমা আক্তার মিলে গৃহবধূ ফাতেমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তার মরদেহটি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করে।
এবিষয়ে নিহতের স্বামী অ্যাডভোকেট সাহিত্য মুরসালিন স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আমি ২০১২ সালে প্রথম বিয়ে করি। কিন্তু আমার প্রথম স্ত্রীর গর্ভ ধারণের ক্ষমতা নেই বলে ডাক্তার জানিয়েছে। প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে পেশাগত কারণে আমি ঢাকাতেই বসবাস করি। পরবর্তীতে সন্তানের আশায় আমি চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি ফাতেমাকে বিয়ে করে তাকে বাড়িতে মায়ের কাছে রাখি এবং আমি তাকে প্রতি মাসেই ১০-১২ দিন করে সময় দিয়ে আসছিলাম। তিনি আরো বলেন, আমি ফাতেমার মৃত্যুর খবর শুনে ঢাকা থেকে ছুটে এসেছি। ফাতেমার সঙ্গে আমার খুবই মধুর সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সে কেন যে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল তা কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিহত গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর নিহতের পিতার দায়েরকৃত মামলার ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা নিহতের স্বামী, তার বড় ভাই ও ভাবীকে গ্রেপ্তার করে শনিবার বিকেলে আদালতে পাঠিয়েছি।

অনুরূপ সংবাদ

জনপ্রিয় পোস্ট