রিপন বনিক, বিশেষ প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে এক মাদরাসা শিক্ষার্থীকে (১১) বলাৎকারের অভিযোগে মো. হাছান মিয়া ওরফে হাছান মুন্সি (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকেলে মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গত শনিবার ভুক্তভোগী ওই শিশুটির মা বাদী হয়ে হাছান মুন্সির বিরুদ্ধে মোহনগঞ্জ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন ।
অভিযুক্ত মো. হাছান মিয়া ওরফে হাছান মুন্সি মোহনগঞ্জ পৌরশহরের খলিফাপট্রি এলাকার বাসিন্দা। তিনি পৌরশহরের খলিফাপট্টিতে নিজস্ব একটি দোকানে দীর্ঘদিন ধরে কাফনের কাপড় বিক্রির পাশাপাশি কবিরাজি পেশা চালিয়ে আসছিলেন। আর ভুক্তভোগী শিশুটি পার্শ্ববর্তী উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা এবং সে মোহনগঞ্জ পৌরশহরের একটি মাদরাসার ছাত্র।
মামলার অভিযোগ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই শিশুটি মাদরাসা থেকে বেড়িয়ে হাছান মুন্সির দোকানের সামনে দিয়ে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এসময় হাছান মুন্সি শিশুটিকে ডেকে তার দোকানে আনেন এবং নানা প্রলোভনে শিশুটিকে দোকানে বসিয়ে রাখেন। পরে রাত ১১টার দিকে আশপাশের সব দোকান বন্ধ হয়ে গেলে শিশুটিকে ভেতরে রেখেই দোকান বন্ধ করেন হাছান মুন্সি। পরে এক পর্যায়ে ভয় দেখিয়ে শিশুটিকে বলাৎকার করেন তিনি। গভীর রাতে শিশুটিকে দোকান থেকে বের করে দিয়ে তিনি বাসায় চলে যান। এদিকে এতিম ওই শিশুটি বাড়িতে গিয়ে এ বিষয়টি তার মাকে জানায়। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটির মা তার আত্মীয়-স্বজনসহ গ্রামের লোকজনকে বিষয়টি জানান। পরে উত্তেজিত গ্রামবাসী হাছান মুন্সির দোকানে গেলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাছান মুন্সি দোকান ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন শনিবার এ ঘটনায় ওই শিশুর মা বাদী হয়ে মোহনগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হাছান মুন্সির পার্শ্ববর্তী একাধিক ব্যবসায়ী জানান, হাছান মুন্সি দীর্ঘদিন ধরে খলিফাপট্টি এলাকায় কাফনের কাপড় বিক্রি করেন। পাশাপাশি তিনি কবিরাজিও করেতেন। আমরা তাকে একজন ধার্মিক মানুষ হিসেবেই জেনে আসছি। তবে ঘটনা সত্য হলে এমন নিকৃষ্ট এই কর্মকাণ্ডের জন্য তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, অভিযুক্ত হাছান মুন্সি পলাতক থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই হাছান মুন্সি এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তবে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।